আজ রবিবার, ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

লাশ যায় কারাগারে!

নিজস্ব প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় দায়ের করা একটি মামলায় কারাগারে বন্দি রয়েছেন হাজতি স্বামী। মঙ্গলবার সকালে মারা যায় তার তার স্ত্রী। স্ত্রী’র নামাজে জানাজায় স্বামীকে অংশ নেয়ার সুযোগ চেয়ে আবেদন করা হয় জেলা প্রশাসনে। জেলা প্রশাসন থেকে সিদ্ধান্ত দেয়া হয় হাজতি নয় লাশ আসবে কারাগারের গেটে। মঙ্গবার বিকেল ৩ টার দিকে নারায়নগঞ্জ জেলা কারাগারের প্রবেশ গেটে নেয়া হয় স্ত্রীর লাশ। সেখানেই চির জীবনের সঙ্গীকে চির বিদায় জানিয়ে ফের কারাগারে যান স্বামী।
এর আগে দুপুরে জেলা প্রশাসনের কাছে মায়ের জানাযায় বাবাকে অংশ গ্রহনের জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন মো. রাসেল। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, বন্দর থানার মামলা নম্বর ১৫ (৮) ২০ এর নারায়ণগঞ্জ কারাগারে বন্দি হাজতী আসামী আহাম্মদ আলীর স্ত্রী কুসিয়া বেগম মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় মারা গেছেন। তার নামাজে জানাজা বাদ আসর অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য তার স্বামী হাজতি আহাম্মদ আলীকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে স্বামী হিসেবে স্ত্রীর প্রতি ধর্মীয় শেষ কাজ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য আবেদন করা হয়।
কারাগারে বন্দি হাজতি আহাম্মদ আলীর ছোটভাই মো. মিজান জানান, জেলা প্রশাসন আবেদনটি গ্রহন করেছেন তবে তারা প্যারোলে মু্িক্তর আদেশ দেননি। তারা লাশ নিয়ে যেতে বলেছেন কারাগারে ।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরা ববি জানান, মৃত কুসিয়া বেগম এর স্বামী হাজতি আহাম্মদ আলীকে প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়নি। তাই তার স্ত্রীর লাশ কারাগারের গেট এর বাইরে সাধারণ স্থানে তার স্বামীকে দেখানোর জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে। পূর্বেও অনেক হাজতির স্বজনের লাশ কারাগারের গেট এর সামনে দেখানোর জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে।
তবে মৃত কুসিয়া বেগমের স্বজনদের অভিযোগ, স্বামীকে স্ত্রীর জানাজায় অংশ নিতে অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। এতে করে লাশ নিয়ে নদী পার হয়ে কারাগারে আসতে হয়েছে। মোহাম্মদ আলীকে দেখিয়ে ফের নদী পার হয়ে লাশ নিয়ে যেতে হয়েছে।
মৃতের স্বজন মো. খোকন বলেন, আমরা গরিব পরিবার। লাশ নিয়ে কারাগারে আনতে হয়েছে। মরদেহ তার স্বামীকে দেখাতে লাশ নিয়ে যদি এতো কষ্ট করতে হয় তাহলে কি লাভ আবেদন করে।
হাজতির ভাতিজি বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ লাশ নিয়ে ভেতরে গেছে তারা চাইলে মৃতদেহটিকে কষ্ট না দিয়ে হাজতিকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারতো। পূর্বে মারা যাওয়া অনেকর বাড়িতে হাজতিকে নিয়ে গেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
নারায়ণগঞ্জ কারাগারের জেল সুপার মাহবুবুল আলম জানান, জেলা প্রশাসন অনুমতি দিলে আমরা হাজতিকে নিয়ে যাই। এছাড়া মানবিক কারণে অনেক সময় প্রশাসন অনুমতি দেয় কারাগারের বাইরে লাশ হাজতিকে শেষ বারের মতো দেখানোর জন্য। এ বিষয়ে আইনেও বলা আছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে নারায়ণগঞ্জের সরকারি কৌসুঁলি ওয়াজেদ আলী খোকনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মানবিক কারণে প্রশাসন ও কারা কর্তৃপক্ষ এ ধনের সুযোগ দেন মৃতের পরিবারকে। এখানে আইনে বলা হয়েছে প্যরোলো মুক্তি না পেলে কারাগারের মূল ফটকের বাইরে হাজতির লাশ দেখতে পারবেন যদি কারা কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন অনুমতি দেয়।